অলিউর রহমান মেরাজ, নবাবগঞ্জ দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে মধ্যরাতে কালবৈশাখী ঝড়ে পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৩০০ বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।

ক্ষতি হয়েছে দেড় শতাধিক বিঘা ফসলের। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর স্থানীয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহতদের নগদ সহায়তা দেন। কুশদহ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম সবুজ বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়।

এতে ইউনিয়নের গিলা ঝুঁকি, ছাবেদগঞ্জ, মাহাতাবপাড়া, শাল্টিপাড়া, ঘোনাপাড়া গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে যায়। প্রায় দুই সহস্রাধিক কাঁচা ও আধা পাকা বাড়ি ভেঙে পড়ে। এতে আহত হন প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক রাতেই ঝড়ে আক্রান্ত গ্রামগুলোতে ছুটে যান।

সারারাত জেগে নিজ গাড়িতে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করে দেন। বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো মেরামতের চেষ্টা করেছেন অনেকে। আবার অনেকে আহাজারি করছেন।

কিছু কিছু জায়গায় টিনের চালা বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ঝুলে আছে। সাবেদগঞ্জের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন,গ্রামের লোকজন প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছি।

কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ঘরবাড়ির ইটের ও মাটির দেওয়াল ঘুমন্ত গ্রামবাসীর ওপর ভেঙে পড়ে। পাশের বাড়ির সাবিনা বিবি বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সামান্য বৃষ্টি শুরু হয়।

এর মিনিট খানেক পরেই আচমকা দমকা হওয়া শুরু হয়। এ সময় বাড়ির পাকা দেওয়ালের নিচে আমি ও এক ছেলে চাপাপড়ি। ঝড়ে আমার স্বামী ও আরও দুই ছেলে আহত হয়।

স্থানীয়রা উদ্ধার করে। কুষ্টিয়াপাড়া এলাকার ষাটোর্ধ্ব আজগর আলী বলেন, আমার জীবনে এমন ঝড় দেখিনি। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ঝড় এলাকা তছনছ করে দিয়েছে। আমার এক নাতির হাত ভেঙে গেছে।

আমাদের থাকার জায়গা নেই। স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক এসে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। জানতে চাইলে সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে যাই।

আহতদের উদ্ধার করে নিজের গাড়িতে করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। নিজ অর্থায়নে গ্রামে থাকার বিকল্প ব্যবস্থা ও খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি বাড়িতে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।